অভয়নগরে ১৮টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে জেলা জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটিতে স¤প্রতি সংঘটিত অগ্নিসংযোগ ও সহিংস ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৮টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল।
মঙ্গলবার (২৭শে মে) বিকেলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন।
এ সময় অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, দেশে যখনই সংকট এসেছে, জামায়াতে ইসলামী সবসময় অসহায় মানুষের পাশে থেকেছে। আজ এই পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি, নিরুপায় মানুষের কান্না দেখলে যে কারও হৃদয় ব্যথিত হবে। আমরা দলীয়ভাবে এই অসহায় মানুষের পাশে আছি এবং থাকব। শুধু তা-ই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পূর্ণ পুনর্বাসন ও ঘটনার ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অভয়নগর থানা জামায়াতের সভাপতি র্সদার শরিফ হোসেন সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহউল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তাঁরা ১৮টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তিন হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সহযোগিতার জন্য যশোর জেলা জামায়াতে ইসলামী এবং অধ্যাপক গোলাম রসুলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জামায়াত নেতারা বলেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সা¤প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আমাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। এ ধরনের সহিংস ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নেতারা ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, খাদ্য-ত্রাণ সরবরাহ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রসঙ্গত: যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটি গ্রামে কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলাম (৫০) হত্যাকাÐের হত্যার পরের দিনই উত্তেজিত একদল লোক গ্রাামটিতে হামলা চালিয়ে অন্তত ১৮টি হিন্দু পরিবারের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। ঘর হারানো এসব পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
নিহত তরিকুল ইসলাম উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি ছিলেন। তিনি ধোপাদী গ্রামের ইব্রাহিম সরদারের ছেলে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় মাছের ঘেরের জমি ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে। স্থানীয়রা জানান, সুন্দলী ইউনিয়নের বিল বোকড়ে তরিকুলের একটি মাছের ঘেরের ইজারা মেয়াদ শেষ হলে তিনি পাশের কাছুরাবাদ বিলে নতুন ঘের নেওয়ার উদ্যোগ নেন। এতে বিরোধ দেখা দেয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিল্টু বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ডেকে নিয়ে তরিকুল ইসলামকে ছয়জন সন্ত্রাসী কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের বাড়েদাপাড়ায় অন্তত ১৮টি হিন্দু বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। একইসঙ্গে সুন্দলী বাজারের কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।