আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি

যুক্তরাষ্ট্রের আইকন স্ট্যাচু অব লিবার্টি। এই ভাস্কর্যটি উত্তর আমেরিকার এই দেশটির স্বাধীনতার প্রতীক। ফ্রান্সের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল এই মূর্তি। আর এবার সেই স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি করেছেন ফ্রান্সের এক আইনপ্রণেতা। তার দাবি, যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে এটি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল সেই মূল্যবোধের মর্যাদা দেয় না ট্রাম্প সরকার। ফরাসি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এই তথ্য জানিয়েছে।

ফরাসি সংবাদপত্র লা মন্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন একজন ফরাসি পার্লামেন্ট সদস্য। তার যুক্তি, ভাস্কর্যটি যে মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে আমেরিকা আর তা ধারণ করে না। ফরাসি ঐ পার্লামেন্ট সদস্যের নাম রাফায়েল প্লাকসম্যান।

তার দাবি, যে কারণে ফ্রান্স আমেরিকাকে ঐ ভাস্কর্যটি উপহার হিসেবে দিয়েছিল এখন সেই মূল্যবোধের মর্যাদা দেয় না ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। আর তাই আমেরিকার কাছ থেকে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফিরিয়ে নেওয়া উচিত ফ্রান্সের। রবিবার এক জনসমাবেশে এই দাবি করেন ফ্রান্সের বামপন্থি রাজনীতিবিদ রাফায়েল গ্লাকসম্যান। ঐ সমাবেশে তিনি বলেন, আমাদের স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফিরিয়ে দাও। আমরা সেইসব আমেরিকানদের বলব যারা অত্যাচারীদের পক্ষ বেছে নিয়েছে, যারা বৈজ্ঞানিক স্বাধীনতার দাবিতেগবেষকদের বরখাস্ত করেছে তাদের উচিত স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফিরিয়ে দেওয়া। তার দাবি, এই ভাস্কর্য আমেরিকাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা এখন সেই ভাস্কর্যের মর্যাদা রাখতে পারছে না। তাই নিজের দেশেই সেই মূর্তি ঠিকমতো থাকবে।

প্রসঙ্গত, ১৮৮৫ সালে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফ্রান্স থেকে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ঐ মূর্তির ডিজাইন করেছিলেন ফরাসি শিল্পী ফ্রেডেরিক বার্থোলডি। ১৮৮৬ সালের অক্টোবরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট গ্লোভার ক্লিভল্যান্ড ঐ মুর্তির উদ্বোধন করেন। এরপর ১৯২৪ সালে এই মূর্তিকে ‘জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ’ হিসেবে ঘোষণা করে মার্কিন সরকার। ট্রাম্প প্রশাসনের নানা বিতর্কিত পদক্ষেপের কারণে লিবার্টি দ্বীপে অবস্থিত এই স্ট্যাচু এখন ফ্রান্সের হাতেই ফিরিয়ে দেওয়া উচিত বলে দাবি করলেন রাফায়েল প্লাকসম্যান। উল্লেখ্য, ইউক্রেন ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি বিরোধিতা ও সমালোচনা করেছেন গ্লাকসম্যান। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বদল করেছেন এবং আমেরিকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ হ্রাস করছেন তারও সমালোচনা করেন তিনি। এছাড়া মার্কিন গবেষকরা যেন ফ্রান্সে এসে কাজ করতে পারেন সেই উদ্যোগ নেওয়ার জন্যও ফরাসি সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন গ্লাকসম্যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Back to top button