
হাইকোর্টের রায়ে নিয়োগ বাতিল হওয়া সরকারি প্রাথমিকের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাহবাগ মোড় থেকে তাদের আটক করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, শাহবাগ মোড় থেকে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাতজন পুরুষ ও সাতজন নারী রয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যাচাই-বাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ হাজার ৫৩১ জনের বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সড়কের ওপর অবস্থান নেন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। এতে সায়েন্সল্যাব হয়ে মৎস্যভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে প্রায় শতাধিক শিক্ষক দ্রুত নিয়োগের দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়েন। একই সময় পাশে অবস্থান করতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। দুপুর আড়াইটার পর পুলিশ তাদের শাহবাগ মোড থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় অবস্থান কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। জলকামানের পানি ছিটিয়ে তাদের শাহবাগ মোড় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বেলা পৌনে তিনটার দিকে তারা পাশেই জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন।
এর আগে সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় অনেককেই কাফনের কাপড় পরে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়।
রাশেদা বেগম নামে এক নারী বলেন, এ সরকার আমাদের চাকরি দিয়েও কেড়ে নিয়েছে। তাই আমরা রাস্তায় নেমেছি। চাকরি ফিরিয়ে না দিলে সন্তানদের নিয়েই রাস্তায় শহীদ হয়ে যাবো।
২০২৩ সালের ১৪ জুনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নির্বাচন করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসরণ করা হয়, যাতে নারী কোটা ৬০ শতাংশ, পোষ্য কোটা ২০ শতাংশ, ৪ শতাংশ অন্যান্য কোটা ছিল। পরে ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত ৩০ প্রার্থী গত রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানির পর রুল দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ছয় হাজার পাঁচশ ৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। এরপর থেকে আন্দোলন করে আসছেন ফল বাতিল হওয়া শিক্ষক প্রার্থীরা।