খুলনা

যশোর প্রেসক্লাবে মাকাপুর গ্রামবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলন

ওসির বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া ও হয়রানির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ যশোরের চৌগাছা থানার মাকাপুর গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের পক্ষে প্রেসক্লাবে যশোরে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে অনুষ্টিত এই সংবাদ সম্মেলনে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। গ্রামবাসীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লতিফা হায়দার (৬৫)।

লতিফা হায়দার জানান, তার স্বামী মৃত হায়দার আলীর প্রায় ৪০ বিঘা জমি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধ চলছে এবং এ সংক্রান্ত একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন। তিনি অভিযোগ করেন, তার মেঝো ছেলে ব্যারিস্টার একেএম মোর্তজা রাসেল আদালতের বাইরে গিয়ে চৌগাছা থানার ওসি আনোয়ার হোসেনকে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। এর বিনিময়ে ওসি আনোয়ার তার ছোট ছেলে আল-ইমরান , বড় ছেলে এডভোকেট ইমামুল হাসান, তিন কন্যা এবং মাকাপুর গ্রামের নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানি করার চুক্তি করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লতিফা হায়দার আরও অভিযোগ করেন, গত ২৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে চৌগাছা থানা পুলিশ একটি মিথ্যা মামলা (চৌগাছা থানার মামলা নং-২২, জি.আর-৯৩/২৫) দায়ের করে তাদের পরিবারের সদস্যসহ মাকাপুর গ্রামের ২২ জন নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার ও শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করে। পরবর্তীতে ১৭ জন জামিন পেলেও ওসি আনোয়ার আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের পরিবারের কাছে ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা দিতে না পারলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হাত ভেঙে জেলে ভরার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ভয়ে তাদের পরিবার ২ লক্ষ টাকা দিলেও বাকি টাকা না পেয়ে গত ৬ মে ওসি আনোয়ার সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। যশোর সরকারি এমএম কলেজের ছাত্র সিয়ামকেও আটক করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।

লতিফা হায়দার বলেন, ওসি আনোয়ার এখন মাকাপুরের প্রায় দুইশ নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছেন এবং সাধারণ কৃষক ও দিনমজুরদের অজ্ঞাত আসামি হিসেবে চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। নির্যাতনের ভয়ে গ্রামের পুরুষরা বাড়িছাড়া হওয়ায় পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। আটককৃতদের অধিকাংশই দরিদ্র কৃষক ও দিনমজুর এবং তাদের ভিটেবাড়ি ছাড়া অন্য কোনো সম্বল নেই। ওসি আনোয়ার মাকাপুর গ্রামকে পুরুষশূন্য করার হুমকি দিয়েছেন এবং নিরীহ চাষি পরিবারের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন। ওসি আনোয়ার, এসআই মারুফ ও এসআই হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জবরদখল, মাদক কারবারিদের সহযোগিতা সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে গত ৭ মে ওসি আনোয়ারের পক্ষে এসআই মেহেদী হাসান মারুফের দায়ের করা মামলাকে (চৌগাছা থানার মামলা নং-০৭, জি.আর-১০৩/২৫) সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করা হয়। পুলিশের কাজে তারা কোনো বাধা দেননি বরং পুলিশই মারমুখী ছিল এবং এর ভিডিও ফুটেজ তাদের কাছে রয়েছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, স্নেহলতা পারভিন, সানাউল্লাহ ও আলেয়া খাতুন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Back to top button