আইন-অপরাধ

যশোরে মাছসহ ঘের দখলে বাধা দিলে নারীসহ স্বামীকে মারধরের অভিযোগ

বিডি ডেস্ক :যশোরের মনিরামপুর উপজেলার গাবুখালী গ্রামে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা কর্তৃক সংখ্যালঘুর পৈত্রিক সম্পত্তিসহ একটি মাছের ঘের জোরপূর্বক দখল এবং মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মনিরামপুর থানা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগটি সত্য বললেও প্রতিপক্ষরা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।
সুনিতা হাওলাদার ও তার পরিবারের লোকজন জানান, তারা ৫ বোন। পিতার মৃত্যুর পর তিনি তার চাচার কাছ থেকে ৩২ শতক জমি ক্রয় করেন এবং ওই দাগে তার নামীয় ৩২শতক জমি মিলিয়ে একটি ঘের করে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। গত ৫ আগষ্টের পর তার মেঝ বোন অঞ্জলি বিশ্বাস তার স্বামী মুকুন্দ স্থানীয় কিছু মুসলিম লোকদের সহায়তায় তারা হলো মজিদ মোড়লের ছেলে জসিম, নিতায় মাষ্টার, ও জনি হোসেনসহ বেশ কয়েকজন
ঘের দখল নেয় এবং মাছ লুট করে। বাধা দিলে মারপিট করে এবং ঘেরে গেলে হত্যার হুমকি দেয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় ভগ্নিপতি মুকুন্দ সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অনেকবার সালিস মিমাংসা করিলেও ভগ্নিপতি মুকুন্দ তাহা মানে না। বরং গায়ের জোরে গত ১৭ এপ্রিল মারপিট করে ঘের দখল করে। এ অবস্থায় ঘের দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন তারা।
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সুনিতার অভিযোগটি সত্য বললেও তার বোন ও ভগ্নিপতি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।
অভিযোগে সুনিতা জানান, গত ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর থেকে অভিযুক্তরা জোরপূর্বক ঘেরের মাছ ধরে নিতে থাকে। এতে তারা বাধা দিলে অভিযুক্তরা হুমকি দেয় এবং এক পর্যায়ে গত ১৭ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘেরে এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। লোহার রডের আঘাতে সুনিতার ডান পা ভেঙে যায় এবং তার স্বামী রিপন হাওলাদারের হাতের আঙুল ভেঙে যায়।
তিনি আরও জানান, হামলার সময় অভিযুক্তরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং কাপড় ছিঁড়ে দেয়। স্থানীয়রা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় সুনিতা ও তার স্বামী মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
এ বিষয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে জমি লিখে নেওয়ার কথা জানতে চাইলে অঞ্জলি বিশ্বাস জানায়, আমার মায়ের কাছ থেকে আমি জমিটি ক্রয় করেছি। এরপর স্থানীয় জসিম এর কাছে জমিটি বর্গা দিয়েছি। তবে কাগজপত্র দেখতে চাইলে জমির কোন সঠিক কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এবং অঞ্জলি বিশ্বাস ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
আরেক অভিযুক্ত জমি বর্গনেওয়া মজিদের ছেলে জসিমের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফশিয়ার রহমান জানায়, বিষয়টি নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করে দিয়েছি। পরে জানতে পারি বিষয়টি নিয়ে ঘের দখলসহ মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Back to top button