ভেনিজুয়েলায় বিরোধী দল বিহীন বিতর্কিত নির্বাচনে মাদুরোর বিশাল জয়

বিডি ডেস্কঃ ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ ভেনিজুয়েলা এবং তার মিত্ররা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সংসদীয় ও আঞ্চলিক নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে। নির্বাচনে কারচুপির সম্ভাবনায় বিরোধী দলগুলো আগেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলো।
সোমবার (২৬ মে) জাতীয় নির্বাচনী কাউন্সিল প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, জাতীয় পরিষদে মাগদুরোর দল এবং তাদের মিত্ররা মোট ভোটের ৮২.৬৮ শতাংশ পেয়েছে। এই জয়ের ফলে শাসক দলটি অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস ও দেশের শীর্ষ আদালতের মতো গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারবে। এই নির্বাচনে ২৪টি রাজ্যের গভর্নর পদের মধ্যে ২৩টি রাজ্যে শাসক দল জিতেছে। মোট ভোটার উপস্থিতি ছিলো ৪২ শতাংশ।
এদিকে দেশের প্রধান বিরোধী দলের নেতা মারিয়া করিনা মাচাদো এই ভোটের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, দেশের ৮৫ শতাংশ ভোটার এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি এই নির্বাচনের কড়া সমালোচনা করে বলেন, এটি ছিল শাসক দলের একটি সাজানো নাটক।
বিরোধী দলগুলোর ভোট বর্জনের প্রতিক্রিয়ায় মাদুরো জানান, ‘প্রতিপক্ষ মাঠ ছেড়ে দিলে আমাদের কিছু করার নেই।’স্থানীয় সাংবাদিকদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, প্রধান শহরগুলোতে ভোটার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। বেশিরভাগ বিশ্লেষকের মতে এই নির্বাচন আদৌ অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি।
এই নির্বাচনে মাদুরোর জয় এসেছে এমন এক সময়ে, যখন দেশটি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত। একসময় ল্যাটিন আমেরিকার অন্যতম ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত ভেনিজুয়েলা বহু বছরের দুর্নীতি এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বিপর্যস্ত।
তৃতীয় মেয়াদে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত নিকোলাস মাদুরোতৃতীয় মেয়াদে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত নিকোলাস মাদুরো সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেভরন কোম্পানিকে ভেনিজুয়েলার অপরিশোধিত তেল উত্তোলনের অনুমতি বাতিল করেছেন। এর ফলে মাদুরোর প্রশাসন অর্থনৈতিক সংকটে পরবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত প্রায় ৩.৫ লাখ ভেনিজুয়েলান অভিবাসীর নির্বাসন সুরক্ষা বাতিল করা হয়েছে এবং শত শত লোককে এল সালভাদরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কারাগারে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিরোধীদল বিহীন এই নির্বাচন বর্তমান পরিস্থিতি মাদুরোর সরকারকে স্বল্প-মেয়াদে সুবিধা দিলেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তথ্যসূত্র: আল জাজিরা