
তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবীতে উত্তরের ৫ জেলায় টানা ৪৮ ঘন্টার আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। মঙ্গলবার বেলা ১ টায় তিস্তা নদীতে নেমে প্লাকার্ড প্রর্দশন কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনকারীরা। তিস্তা রেলসেতু লালমনিরহাট ও কাউনিয়া প্রান্তে হাজার হাজার মানুষ তিস্তা নদীর হাঁটু পানিতে নামেন। ভারতের পানি আগ্রাসন বন্ধ করা, মরুকররণ থেকে নদী রক্ষায় তিস্তা পানির ন্যায্য হিস্যা প্রদান এবং বন্যা ভাঙ্গন থেকে তিস্তাপাড়ের মানুষকে রক্ষায় মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবী সম্বলিক প্ল্যাকার্ড প্রর্দশন করা হয়। ‘তিস্তা নদী আমার মা, মরতে আমরা দিব না’ জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই সহ নানা শ্লোগান দিতে থাকে। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় তিস্তা রেলসেতু লালমনিরহাট পয়েন্ট থেকে দিনের প্রথম কর্মসূচি পদযাত্রা শুরু হয়। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলুর নেতৃত্বে পদযাত্রাটি তিস্তা সড়ক সেতু হয়ে তিস্তা রেলসেতু কাউনিয়া পয়েন্ট গিয়ে শেষ হয়।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলুর নেতৃত্বে তিস্তা রেলসেতু মঞ্চ থেকে কয়েক হাজার মানুষের অংশ গ্রহণে বিশাল পদযাত্রা বের হয়। পদযাত্রাটি রংপরের কাউনিয়া উপজেলার কাউনিয়া বাসস্ট্যান্ড হয়ে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে বিশ্ববাসীকে তিস্তা নদীর পানির গভীরতা দেখাতে নদীর হাঁটু পানিতে নেমে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন তারা। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার কর্মসূচি পালন করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে নদী পাড়ে আসে মানুষজন। সেখানে দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনা সভা, নাটক, লোকজ গান পরিবেশন শেষে, বালু চরে বিছানা পেতে রাত্রিযাপন করেন।নিজেরা চাল-ডাল সংগ্রহ করে রান্না করে দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেন। তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। এটি রংপুবাসীর আন্দোলন। ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি বাস্তবায়নে শীতকে উপেক্ষা করে তিস্তার চরে বিএনপির নেতা কর্মিদের পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ রাত্রি যাপন করেছেন। তাদের সবার দাবি, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার।
তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থানের ১১টি পয়েন্টের অনুষ্ঠানে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ অংশ নিয়ে রাত্রি যাপন করেছে। সভা মঞ্চে প্যান্ডেল, সমাবেশ ও বিনোদনের জন্য মঞ্চ তৈরি, পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা জানান, নদী ভাঙনে সব আবাদি কৃষি জমি বিলীন হয়ে গেছে। প্রতি বছর বাড়ি-ঘর সরাতে হয়। তিস্তা মহাপরিকল্পনা হলে সব জমিতে আবাদ হবে। আগে অনেকবার মহাপরিকল্পনা হবার কথা শুনলেও বাস্তবায়ন করতে পারেনি বিগত সরকার।
উল্লেখ্য, কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে সমাবেশ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হবে। সন্ধ্যায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখবেন।