
তরিকুল ইসলাম, যশোর: যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যসহকারী ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আলমগীর কবির ঈদ উপলক্ষে সরকারের দেওয়া দুস্থদের জন্যে বরাদ্ধ ভিজিএফের ৭ টি কার্ড একই পরিষদের একজন গ্রাম পুলিশের নিকট দুই হাজার টাকায় বিক্রি করেন, এঘটনা হাতেনাতে ধরেন নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক প্রকাশ চন্দ্র কর্মকার৷ গতকাল দুপুরে ভিজিএফের চাল বিতরনের সময় প্রশাসক প্রকাশ চন্দ্র কর্মকারের সন্দেহ হলে গ্রাম পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদের কার্যসহকারী ও ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আলমগীর কবির কে ধরলে এই ভিজিএফ এর কার্ড বিক্রির রহস্য উন্মোচন হয়।
পরবর্তীতে ভিজিএফ কার্ড বিক্রির ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মাঝে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়, এবং কার্ডচুরি ও বিক্রির সাথে জড়িত আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে শুনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এবিষয়ে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক প্রকাশ চন্দ্র কর্মকার জানান আলমগীর কবির ইউনিয়ন পরিষদে ১০ কার্ডের চাহিদা দেন এবং তাকে ১০ টি কার্ড দেওয়া হয়। এবং সে পরিষদের কয়েকজন মেন্বার কাছ ভিজিএফ কার্ড নিয়েছেন এবং সেই কার্ড গরীবের মাঝে বিতরন না করে ৭টি ভিজিএফ কার্ড ২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে বিক্রিত ভিজিএফ এর কার্ড গুলা উদ্ধার করে আবার অত্র ইউনিয়নের দুস্থ অসহায়দের মাঝে বিতরন করি তবে এমন ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান এখন ঈদের সরকারি ছুটি চলছে, ঈদের পর ছুটি শেষ হলে মিটিং করে এবিষয়ে ব্যবস্থা নিওয়া হবে।
তিনি আরো জানান কার্য-সহকারী আলমগীর কবির অত্র ইউনিয়ন পরিষদে নিয়োগকৃত কর্মচারর নয়।
কার্ড বিক্রির বিষয়ে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোর্শেদ আলম জানান আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ১৯ মেট্রিক টন ২৩০ কেজি চাল ১৯২৩ জন দুস্থের মাঝে মাথাপিছু ১০ কেজি করে চাল বিতরন করি যা সুষ্ঠু ভাবে বিতরন করা হয়েছে। তবে ভিজিএফ এর কার্ড টাকায় বিক্রির কথা শিকার করে তিনি জানান ইউনিয়ন পরিষদের কার্য-সহকারী আলমগীর হোসেন বেশ কয়েকটি কার্ড টাকায় বিক্রি করেছে জানতে পেরে আমি এবং ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক প্রকাশ চন্দ্র কর্মকার বিক্রি করা কার্ড উদ্ধার করে আবারও গরীব এবং দুস্থদের মাঝে বিতরন করে দিয়েছি। সচিব মোর্শেদ আলম আরো জানান গরীবের জন্যে বরাদ্দ ভিজিএফ কার্ড বিক্রি করা এবং কেনা দুটোই অপরাধ। এবিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
ভিজিএফ কার্ড বিক্রির বিষয়ে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা জানান ইউপি সদস্যদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভিজিএফ কার্ড নিয়েছে কিন্তু সেটা গরীবের মাঝে বিতরন না করে বিক্রি করা গৃন্য এবং নিন্দনীয় কাজ এমন কাজের জন্যে আলমগীর হোসেনের অপসারণ এবং শাস্তির দাবী জানান ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা।
এদিকে কার্ড বিক্রির কথা জানাজানি হলে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। খোজ নিয়ে জানা যায় আলমগীর কবির বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন পরবর্তীতে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন। সেভাবে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদে কার্য-সহকারী পদে চাকরি করছিলেন কিন্তু বিগত চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ তাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেন এলাকায় খোজ নিলে একাধিক ব্যক্তি জানান দুর্নীতির কারনেই মুলত চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ আলমগীর কবির কে পরিষদ থেকে বের করে দেন। কিন্তু ৫ আগষ্টে পট পরিবর্তন হলে রাতারাতি নিজেকে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা পরিচয় দিয়ে রাতারাতি আবার স্বপদে ফিরে আসেন। এবং পুর্বের ন্যায় আবারও সবার অগোচরে অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন।
ভিজিএফ কার্ড বিক্রির বিষয়ে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম কে জানতে চাইলে তিনি জানান ভিজিএফ কার্ড বিতরনে বিএনপি সেখানে যায়নি এবং যাবে না এটা দলীয় সিদ্ধান্ত তবে আলমগীর কবির গরীবের ভিজিএফ কার্ড বিক্রি করেছেন এটা মাত্র জানলাম এটা যদি সত্যি হয় তাহলে সে ঘৃণিত কাজ করেছে এসব অন্যায়ের সাথে দল কোন আপষ করবে না এঘটনার বিষয়ে জেনে দলীয় সিদ্ধান্ত জানাব।
এদিকে ভিজিএফ কার্ড বিক্রির ঘটনায় আলমগীর কবির কে জানতে চাইলে তিনি কার্ড বিক্রির কথা শিকার করে ভূল হয়েছে বলে জানান এবং সংবাদ প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখতে বিভিন্ন মহল থেকে তদবীর করেন।