
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চৌগাছায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। স্রেফ একটি সাইকেল ব্যবহারকে কেন্দ্র করে বড় ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারাল ছোট ভাই শিহাব হোসেন (২১)। পারিবারিক কলহের এমন ভয়াবহ পরিণতি কাঁদিয়েছে গোটা এলাকাকে।
আজ সোমবার (২ জুন) দুপুরে উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়নের শাহাজাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিহাব কাতারপ্রবাসী মহিদুল ইসলামের মেজো ছেলে। অভিযুক্ত বড় ভাই সুমন হোসেন (২৫) ঘটনার পর থেকে পলাতক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন ভাইয়ের মধ্যে মেজো ছিলেন শিহাব। পার্শ্ববর্তী এক বাড়িতে খানায় যাওয়ার জন্য বড় ভাই সুমনের সাইকেলটি নিয়ে যান তিনি। খানার দাওয়াত শেষে বাড়ি ফিরে সাইকেল ব্যবহারে শুরু হয় দুই ভাইয়ের বাগবিতণ্ডা। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের একপর্যায়ে সুমন কোমর থেকে ছুরি বের করে শিহাবের পিঠে আঘাত করেন।
রক্তাক্ত শিহাব মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বাড়ির উঠানে থাকা নিহতের মামা শুকুর আলী জানান, “চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি শিহাব রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তখন সে আমাকে বলল, ‘মামা, আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চলো, নাহলে আমি বাঁচব না।’
স্থানীয়দের সহায়তায় শিহাবকে দ্রুত চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আনোয়ারুল আবেদীন বলেন, “তার পিঠের বামদিকে গভীর ছুরিকাঘাত ছিল। আমরা শিহাবকে মৃত অবস্থায় পাই।”
শিহাবের মায়ের চোখে অশ্রু আর কণ্ঠে কেবল একটি কথাই, “বাইসাইকেল নিয়ে ঝগড়া হচ্ছিল, দূর থেকেই টের পেয়েছিলাম…” বাকিটুকু আর বলতে পারেননি, কান্নায় ভেঙে পড়েন।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “এটি খুবই মর্মান্তিক একটি ঘটনা। অভিযুক্ত বড় ভাই সুমন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
একটি সাইকেল, একটি উত্তপ্ত মুহূর্ত—আর তাতেই ঝরে গেল একটি তাজা প্রাণ। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, পারিবারিক দ্বন্দ্ব নিয়ন্ত্রণ না পেলে তার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।