আইন-অপরাধ

চুরির অভিযোগে দুই চোখ উপড়ে ফেলল গ্রামবাসী

ভোলার চরফ্যাশনে চুরির অভিযোগ তুলে শাহাজাহান মিন্টিজ (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে ভয়ংকর নির্যাতন করেছে স্থানীয়রা। তার হাতের বড় আঙুল কেটে দেওয়া হয়েছে, হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়েছে, এমনকি তুলে ফেলা হয়েছে তার দুই চোখও।

আজ রবিবার (২ মার্চ) সকালে দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের চর আরকলমী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে গ্রামপুলিশ তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
মিন্টিজ ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার বাবা ছিডু ছিলেন পেশাদার চোর। কয়েক বছর আগে কারাগারে থাকাকালীন ছিডুর মৃত্যু হয়।

স্থানীয়দের ভাষ্য, মিন্টিজ দীর্ঘদিন ধরে চুরির সঙ্গে জড়িত। তবে তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম অভিযোগ করেছেন, সন্দেহের ভিত্তিতে তাকে তুলে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। তিনি দাবি করেন, মাঝের চর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা লোকমান হোসেনের ছেলে মো. সাকিব ও তার সহযোগীরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিন্টিজ দীর্ঘদিন ধরে ভোলার দক্ষিণাঞ্চলে চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়িত। সম্প্রতি এলাকায় একাধিক বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। রবিবার সকালে চর আরকলমী গ্রামে নিজ বাড়িতে তাকে দেখে স্থানীয়রা ধাওয়া দেয়। পরে জাহাঙ্গীর ফরাজির বাড়ি থেকে আটক করা হয় মিন্টিজকে। এরপর তাকে বারেক ফরাজির বাড়ির পুকুরপাড়ে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে তার দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয়।

গ্রাম পুলিশ সোরহাব হোসেন জানান, খবর পেয়ে কয়েকজনের সহায়তায় তিনি মিন্টিজকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

মিন্টিজের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘মাদ্রাসা অধ্যক্ষ লোকমান হোসেনের ছেলে সাকিবের নেতৃত্বে লোকজন আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে নির্মমভাবে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে চোখ তুলে ফেলে।’ ঘটনার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত থাকলেও ভয়ে কিছু বলতে পারেননি বলে জানান।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মো. সাকিব। তিনি বলেন, ‘মিন্টিজ এলাকার কুখ্যাত চোর। চুরির অভিযোগে স্থানীয়রা গণপিটুনি দিয়েছে। আমি এর সঙ্গে জড়িত নই।

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের উপ-সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘মিন্টিজকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখন তার হাতের বড় আঙুল কাটা ছিল, হাত-পা ভাঙা ছিল এবং চোখ দুটো উপড়ে ফেলা হয়েছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Back to top button