আইন-অপরাধ

আদালতের এজলাসে হট্টগোল, ইনুর হাতকড়া খুলে দিল পুলিশ

কুষ্টিয়ায় আন্দোলনকারীদের হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে কুষ্টিয়া কারাগার থেকে তাদেরকে আদালতে আনা হয়।

ধার্য দিনে কুষ্টিয়া সদর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানার আদালতে ইনু ও জর্জকে হাজির করা হয়। এজলাসের কাঠগড়ায় হাতকড়া পরিয়ে রাখায় হট্টগোল ও পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ান ইনু। পরে ইনুর হাতকড়া খুলে দেয় পুলিশ। এ সময় সাবেক এমপি জর্জ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জর্জের হাতকড়া খুলে দিতে গেলেও পুলিশকে খুলতে দেননি তিনি।

হাজিরার ধার্য দিনে শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে আদালত থেকে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কড়া নিরাপত্তায় তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাদেরকে দেখতে আদালতে জাসদ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। আদালতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ধার্য দিনে ইনু ও জর্জকে প্রিজন ভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। এরপর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় এজলাস কক্ষের কাঠগড়ায় তোলা হয়। এ সময় ইনু ও জর্জের হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। হাতকড়া পরানো অবস্থায় কাঠগড়ায় উঠানো নিয়ে ইনু ও জর্জ পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। কাঠগড়ায় হাতকড়া পরিয়ে রাখার আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জর্জ ও ইনু। পরে ইনুর হাতকড়া খুলে দেয় পুলিশ। জর্জের হতকড়া পুলিশ খুলে দিতে গেলেও তিনি খুলতে দেননি। তবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জর্জ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের ইসলামিয়া কলেজ এলাকায় আন্দোলকারীদের গুলি করে ও এলোপাতাড়ি মারপিট করে ছাত্রজনতাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

এ ঘটনায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর আহত আন্দোলনকারী শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় মোট ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৭০/৮০ জনকে।

এ মামলার ৩৩ নম্বর আসামি সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ এবং ৩৭ নম্বর আসামি সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। সেলিম আলতাফ জর্জ কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

আদালত পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া মডেল থানায় আন্দোলকারীদের হত্যাচেষ্টা মামলায় ধার্য দিনে ইনু ও জর্জকে কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক তাদের দুজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কুষ্টিয়া সদর আমলি আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই ইস্কান্দার আলী বলেন, ধার্য দিনে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। পরে তাদেরকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Back to top button